বেলপাহাড়ি ব্লকের জয়পুর গ্রামে গাছেই স্টাডি রুম বানিয়ে পড়াশুনা করছে এক যুবক
![](https://newsbanglalive.in/wp-content/uploads/2023/02/IMG_20230218_155200.jpg)
সৌমেন আদক, ঝাড়গ্রাম: ছোটো থেকেই গাছ পালার মধ্যে বড় হয়ে ওঠা। গাছকে ভালোবেসে সেই গাছেই নিজের স্টাডি রুম বানিয়ে ফেলেছেন যুবক বরুণ দাস। বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদার জয়পুর গ্রামে। ছোট পরিবার। মেরেকেটে ৮০০ স্কোয়ার ফুটের বাড়িকে ঘিরে রেখেছে কমপক্ষে ৭০ টি গাছ।
ছোট থেকেই গাছের ছায়ায়, গাছের নিচে খেলে বড় হওয়া বরুণ ভাবতেন গাছেই ঘর বানাবেন। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে গাছেই হবে তাঁর স্টাডি রুম। কেন এমন ভাবনা ?
![](https://newsbanglalive.in/wp-content/uploads/2023/02/IMG_20230218_155215.jpg)
জানালেন , ছোটবেলায় কাটুন দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ছোট ভিম এর যজ্ঞুর বাড়ি গাছের উপরে। সেইখান থেকেই এই ভাবনা চিন্তা গাছের উপরে ঘর। আর লকডাউনে যখন মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাচ্ছিল না তখন তিনি এই গাছের উপরে ঘরটি বানিয়েছিলেন মোবাইলে নেটওয়ার্কে অনলাইন ক্লাস করার জন্য। জঙ্গল ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রামে একটা বড় সমস্যা হচ্ছে মোবাইলে টাওয়ার থাকা। ডিজিটাল যুগে যা সঙ্গী হয়ে উঠেছে কলেজ পড়ুয়া থেকে আমআদমি সকলের।
২০১৯ এর সেই ভাবনা কার্যকরী করেন তিনি। নিম গাছ এমনিতেই শক্ত পোক্ত গাছ। তিনটি মোটা গাছের ডালের উপর বাঁশ , কাঠ পরপর বেঁধে এর উপর খড় , চাটাই , ত্রিপল পেতেছেন। বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে। ছোট দরজা আছে। চাবি তালা দেওয়া যায়। অন্যদিকে খোলা জানলা আছে। হাওয়া আসার জন্য। বৃষ্টি আসলে ত্রিপল ফেলে দেন। রয়েছে আলোর ব্যবস্থা।
![](https://newsbanglalive.in/wp-content/uploads/2023/02/IMG_20230218_155148.jpg)
বরুণ জানান , ২০২০ ও ২০২১ সালে তাঁর এই স্টাডি রুম দারুন কাজে লেগেছে। গ্রামের আরো অনেক স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া তাঁর এই স্টাডি রুমে এসে পড়াশুনা করতে আসত। এখনো তাঁরা আসে। মোবাইলে টাওয়ার না থাকলে ছোটরা উঠে পড়ে গাছ বাড়িতে। ছুটির দিনে নিশ্চিত হয়ে গেম খেলে।গ্রামে রাস্তার পাশে তেলেভাজা দোকান চালান। জয়পুর হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর শিলদা কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করার পর সম্প্রতি বিএড করেছেন।
![](https://newsbanglalive.in/wp-content/uploads/2023/02/IMG_20230218_155229.jpg)
চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। টিউশনি পড়ান। লকডাউনের সময় তিনি এই গাছ ঘরটি বানিয়েছিলেন। মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়ার জন্য তখন অনলাইনে ক্লাস হত কিন্তু। এখনো রয়ে গেছে সেই গাছ ঘর। মাঝে মধ্যে নেটওয়ার্ক না এলে গাছেই উঠেই যাবতীয় কাজকর্ম করেন বরুন দাস।