সুখবর! খাদ্যরসিক বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে জালে ধরা দিল টন-টন ইলিশ
নিউজ বাংলা লাইভ : ডায়মন্ডহারবার; দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান।এবার মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে ইলিশ।বেশ কয়েক বছর ধরেই ইলিশ যেন বাঙালির নাগালের বাইরেই ছিল।যোগান কম থাকায় দাম ও বেশি ছিল ইলিশের। আবহাওয়া এখন যথেষ্টই অনুকূল। তাই মৎস্যজীবীদের জালে টন টন ইলিশ।ইলিশ মরশুমের শুরুতেই এত ইলিশ ধরা পড়ায় গোটা মরশুমের জন্যই আশার আলো দেখছেন মৎস্যজীবীরা।গত ৩-৪ দিনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, রায়দিঘি ও ফ্রেজারগঞ্জের মৎস্যজীবীরা জালবন্দি করেছেন প্রচুর ইলিশ। সমুদ্রফেরত ট্রলারে চাপিয়ে টন টন ইলিশ ভিড়েছে উপকূলীয় মৎস্যবন্দরগুলিতে। মৎস্যজীবী মহল্লায় তাই খুশির রোশনাই।
![](https://newsbanglalive.in/wp-content/uploads/2023/07/IMG-20230727-WA0089.jpg)
এবার মরশুমের প্রথম ইলিশ শিকারে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার ট্রলার।গত কয়েক বছর ধরে ইলিশ না পাওয়ায় এবং ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রায় সাত হাজার ট্রলারের সব এবার মরশুমের শুরুতে পাড়ি জমায়নি সমুদ্রে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গত তিনদিনে কাকদ্বীপ ও নামখানা মৎস্যবন্দরে ৪৫০ থেকে ৫০০ টন ইলিশ ঢোকে।মোহানায় মিষ্টি জলের ইলিশ এখনও অধরাই।ফলে ধরা পড়া ইলিশ স্বাদে ও আকৃতিতে মিঠে জলের ইলিশের তুলনায় ইলিশপ্রিয় বাঙালির কাছে অনেকটাই হতাশাব্যঞ্জক।ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, গভীর সমুদ্রে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসায় মৎস্যজীবীরা এবার আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। মাঝেমাঝেই হালকা বৃষ্টি এবং পূবালি হাওয়া সমুদ্রে ইলিশ প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ। নাগাড়ে মাসখানেক ধরে সেই অনুকূল পরিস্থিতি চলায় সমুদ্রের স্রোত বাংলাদেশের দিক থেকে ভারতীয় অভিমুখে বইছে। ফলে দিক পরিবর্তন করে ইলিশের ঝাঁকও ঢুকছে ভারতের মোহানার দিকে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনে আরও ইলিশ জালে বন্দি করা সম্ভব হবে মৎস্যজীবীদের পক্ষে। যা আগামী ৩-৪ বছর ধরে চলা ইলিশের খরা কাটাতে পারবে বলে মনে করছেন তিনি।তবে বেশিরভাগ ইলিশই ধরা পড়ছে গভীর সমুদ্র থেকেই। মিঠে জলে প্রবেশ করা ইলিশের সংখ্যা সে তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে ধরা পড়া ইলিশগুলি গোলগাল আকৃতির না হয়ে একটু লম্বাটে আকৃতির। স্বাদেও মিঠে জলের ইলিশের ধারেকাছে নয় সেসব ইলিশ। যদিও মৎস্যজীবীরা আগামী কয়েকদিনেই মিঠে জলের ইলিশ পাওয়ার আশায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।প্রায় প্রতিদিনই কাকদ্বীপ, নামখানা ফ্রেজারগঞ্জ, রায়দিঘির ঘটে ভেড়া ট্রলার থেকে ম্যাটাডর ভরতি করে ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের কাছে বিকোতে ইলিশ আনছেন ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার পাইকারি মাছের আড়তে। এদিকে ওই পাইকারি বাজার থেকে সেই ইলিশ কিনতে রাজ্যের বিভিন্ন বড় বড় খুচরো মাছবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরাও ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে। গাড়ির ভিড়ে প্রতিদিন ভিড়াক্কার তাই এখন ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে জেরবার নগেন্দ্রবাজারের সামনের বিস্তীর্ণ এলাকা।ডায়মন্ডহারবারের পাইকারি বাজারে বিকোনো ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি প্রতি দর ৫৫০-৬০০ টাকা। তার থেকে বেশি ওজনের অর্থাৎ ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের পাইকারি বাজার দর ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং এক থেকে দেড়কেজি ওজনের বড় ইলিশের পাইকারি দর যাচ্ছে ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের সেই বড় ইলিশের সংখ্যা নিতান্তই অল্প। শীঘ্রই ওই বড় ইলিশের জোগান বাড়বে বলেই মনে করছেন আড়তদাররা।