ব্রেকিং নিউজমালদা

সরকারি জমি দখল করে শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, আন্দোলন করতে গিয়ে আক্রান্ত বিজেপি নেতা, পাল্টা বিজেপির নেতার বিরুদ্ধে নাটকের অভিযোগ তৃণমূলের, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার পর্দা ফাঁস বিজেপি নেতার, শুরু রাজনৈতিক তরজা

নিজস্ব প্রতিনিধি,হরিশ্চন্দ্রপুর:-সরকারি জমি দখল করে শপিং কমপ্লেক্স তৈরীর অভিযোগ। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আন্দোলন করতে গিয়ে আক্রান্ত বিজেপি নেতা। বিজেপির অভিযোগ মারধর করে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়েছে তৃণমূল। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের। পাল্টা তৃণমূলের দাবি এটা বিজেপির চক্রান্ত এবং নাটক। বিজেপি নেতা টাকার দাবি করে পাইনি। তাই এই ধরনের নাটক করছে। সিসিটিভি ফুটেজেও ধরা পড়েছে সেই নাটকের চিত্র। সমগ্র ঘটনা নিয়ে ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের বাস স্ট্যান্ড এলাকার ঘটনা। হরিশ্চন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ঘোড়া গাড়ির স্ট্যান্ড ছিল। পরবর্তীতে ঘোড়া গাড়ি বন্ধ হয়ে গেলে সেই স্ট্যান্ড পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। আবর্জনায় ভরে গেছিল সমগ্র চত্বর। তাই সেই জায়গা পরিষ্কার করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বিজেপির অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সেই জায়গা পরিষ্কার করে সেখানে যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং শৌচাগার করা হবে। কিন্তু পরিবর্তে সেই জায়গায় হচ্ছে শপিং কমপ্লেক্স। যারা দোকান দিচ্ছে তারাও বৈধ ভাবে দোকান দিচ্ছে না। এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দল নেতা রুপের আগরওয়াল প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানান। শনিবার এই নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর শহীদ মোড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য মাইক তার খুলে নেওয়া হয়। এমনকি বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ রায় কে মারধর করে চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ তৃণমূল কর্মী দুর্জয় দাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসতেই ঘটনায় নাটকীয় মোড়। তৃণমূলের দাবি ওই চন্দ্রনাথ রায় টাকার দাবি করেছিলেন। না পাওয়াতে এই ধরনের নাটক করছেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতেই বিজেপির এই চক্রান্ত। এমনকি চন্দ্রনাথ রায়ের আগেও আন্দোলনের নাম করে অনেককে ব্ল্যাকমেল করেছেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী আফজাল হোসেন জানিয়েছেন চন্দ্রনাথ রায় তাদের কাছ থেকে পুজোর সময় নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি নিয়ে গেছেন। আবার ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা দাবি করেছিলেন। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে চন্দ্রনাথ রায় নিজেই লঙ্কার গুঁড়ো নিজের চোখে দিয়ে নিয়েই রাস্তায় পড়ে গেছেন। এদিকে যে জায়গায় নিয়ে এত বিবাদ সেটি পিডব্লিউডির জায়গা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে তার পেছনের জায়গাটি নরেশচন্দ্র আগারওয়াল ওরফে গাব্বুর। তিনি সামনে দোকান করছেন যেখানে বেকার যুবক-যুবতীরা থাকছে। হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সঙ্গে এর কোন যোগ নেই। পঞ্চায়েত সূত্রে দাবি এ ক্ষেত্রে প্রশাসন যা করার তাই করবে। প্রসঙ্গত এই ধরনের নাটকীয় ঘটনা তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশচন্দ্রপুর এলাকায়। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজের ছবি অন্য কথা বলছে।এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে জোড় রাজনৈতিক চাপানোতোর।আহত বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ রায় বলেন, আজ আমাদের সর্বদলীয় কর্মসূচি ছিল। তৃণমূলের লোকেরা সেখানে আমাকে মারধর করেছে। চোখে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়েছে। ঠিক করে দেখতে পাচ্ছি না।হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা রূপেশ আগরওয়াল বলেন, বাম আমলে এই ঘোড়া গাড়ি স্ট্যান্ডে তৈরি করা হয়েছিল। সেটি ভেঙে অবৈধভাবে শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণ হচ্ছে। পুজোর সময় একটি বিরিয়ানির দোকান দেখে আমাদের নজর আসে। এই মর্মে আমি প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে চিঠি করেছি। আজ সর্বদলীয় কর্মসূচি ছিল সেখানে তৃণমূলের লোকেরা আক্রমণ করেছে। আমাদের নেতা চন্দ্রনাথ রায় কে ব্যাপক ভাবে মেরেছে।যার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ সেই তৃণমূল নেতা দুর্জয় দাস বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে বিজেপি। চন্দ্রনাথ রায় বরাবর এই ধরনের নাটক করে।হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিশবা খাতুনের স্বামী আফজল হোসেন বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভাবে বিজেপির চক্রান্ত এবং চন্দ্রনাথ রায়ের নাটক। উনি টাকার দাবি করেছিলেন সেটা না পেয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। মানুষ সব দেখছে মানুষ জানে কোনটা সত্যি। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে।হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, চন্দ্রনাথ রায়ের কথাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন করি না। উনি থানার সামনে সারাদিন ঘুরে বেড়ায়।যখন-তখন রাস্তায় শুয়ে পড়ে আন্দোলনের নাম করে টাকা তোলার চেষ্টা করেন। এগুলো বিজেপির মদতে চক্রান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *