ঝাড়গ্রামশীর্ষ খবর

শুরু হল জঙ্গলমহল উৎসব! উদ্বোধনে মন্ত্রী, জেলা শাসক

সৌমেন আদক,ঝাড়গ্রাম: আজ জঙ্গলমহলে উৎসব মঞ্চ কাঁপল বিরাট আয়োজনে। মন্ত্রী থেকে আমলা, পুলিশ থেকে জনপ্রতিনিধিদের সকলে মিলেই মেতে উঠলেন উৎসব আমেজে। বাংলা, হিন্দি , ইংরেজি , পাঞ্জাবি, সাঁওতালী ও টুসু গানের সুরে ভরে গেল মঞ্চ। হিন্দি গানে কণ্ঠ মিলিয়ে মজে উঠলেন ঝাড়গ্রামের জেলা শাসক সুনীল কুমার আগরওয়ালা। সাঁওতালী গান গাইলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। টুসু গান গাইলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস। এছারাও এদিন পাঞ্জাবী গান গাইতে দেখা গেলো অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অগ্নিত পুনীয়াকে। বিশিষ্ট্য ব্যাক্তিদের গলায় গান শোনার জন্য দর্শক আসনে ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। জঙ্গলমহল উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রথমেই শুরু হয় প্রশাসনের এই সংগীত অনুষ্ঠান।

প্রথম গান করলেন বিনপুর থানার ওসি স্বরূপ বসাক । মান্না দের গানে গলা ছেড়ে চরালেন সুর। তারপর একে একে গান করেন ঝাড়গ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ ও ভাইস চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কাউন্সিলররা। কবিতা ঘোষের সঙ্গে গলা মেলান সকলেই। এরপর ঝাড়গ্রামে অতিরিক্ত জেলাশাসক অগ্নিত পুনিয়া একটি পাঞ্জাবি গান করেন। জেলা গ্রাম উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত আধিকারিক অনন্য জানা ‘কালো জলে কুচলা তলে ডুবল সনাতন’ গানটি পরিবেশন করেন । লোক কবির কবিতা পাঠ করেন ঝাড়গ্রামে মহকুমা শাসক বাবুলাল মাহাতো । এডিএম ধরিমান বরুই , পাত্র ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট , বিনপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাহালা হাঁসদা ও ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু সাঁওতালি গান পরিবেশ করেন । সাঁওতালি বিয়ে বাড়ির একটি বিশেষ গান করেন মামনি । জেলা আনন্দধারা প্রকল্পের অধিকারী শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় একটি ইংরেজি ভাষার গান পরিবেশ করেন । এসটি , এসসি দপ্তরের জেলা আধিকারিক শঙ্খ শুভ্র দে বাংলা সিনেমার খুব পরিচিত ” আজ এই দিনটিকে মনেরে খাতায় লিখে রাখো ” গানটি করেন । গান শুরু হতেই দর্শক আসনে বসে থাকা প্রত্যেকের উল্লাস ছিল দেখার মতো। উৎসাহের নিয়ে গানের সাথে গলা মেলান সকলেই। গানের শেষে আসে আরো একবারের অনুরোধও। এরপর যথারিতি সকলের অনুরোধে আরও একটি গান করেন তিনি। গান করেন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ ও শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান রবিন টুডু ও ট্রাইবেল অ্যাডভেজারি কাউন্সিল সদস্য বীরবাহার সরেন টুডু সাঁওতালি গান করেন। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস একটি টুসু গান পরিবেশন করেন। সভাধিপতির পরেই একটি হিন্দি গান পরিবেশন করেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়াল। মঞ্চে সর্বশেষে একটি সাঁওতালি গান পরিবেশন করেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। বলা ভালো প্রায় সারাটাদিনই কাটে উল্লাসের আমেজে। উৎসবের মোহময়ী রূপে সেজে ওঠে পরিবেশ। এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশাসনের এমন মন ভালো করা চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠান দেখে খুশি হয় উপস্থিত বিপুল সংখ্যক দর্শকবৃন্দ।

প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়ালা বলেন ,” সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে মন্ত্রী জনপ্রতিনিধিরা সব সময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা কখনো প্রকাশ পাই না । সারাদিনের কাজের চাপ ফেলে দিয়ে মানুষের কাছে যদি এই প্রতিভা গুলো তুলে ধরা যায় তাহলে একটা আনন্দ পাওয়ায় যায় । যে সমস্ত সাধারণ মানুষ জন অনুষ্ঠান দেখতে এসেছে তারাও দেখবে যে প্রশাসনের এক অন্য মুখ । ফলে সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হবে”।

বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরের ঝাড়গ্রাম ননীবালা বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ৯তম জঙ্গলমহল উৎসব । এদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলনীর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঝাড় গ্রামের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার , জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ একাধিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। তিন দিন ধরে চলবে এই জঙ্গলমহল উৎসব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *