পশ্চিম মেদিনীপুর

শিলদা মাও হামলায় ২৪ জওয়ানের মৃত্যুর বদলা!২৩ জন দোষীর মধ্যে ১৩ জনের যাবজ্জীবন !

পশ্চিম মেদিনীপুর : গত ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভয়ঙ্কর মাও হামলা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। চোদ্দ বছর আগে ঝাড়গ্রামের শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে ভয়াবহ হামলা চালায় মাওবাদীরা। এলোপাথাড়ি গুলি সাথে আগুন লাগিয়ে দেয় ক্যাম্পে।নৃশংস এই হত্যা কাণ্ডে ২৪ জন EFR জওয়ান এর মৃত্যু ঘটেছিল।যদিও সেই ঘটনায় জওয়ানদের পাল্টা প্রতিরোধে ঘটনাস্থলে ৫ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছিল।এই ঘটনাই ছিল বাম আমলের শেষদিকে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় মাওবাদী হামলা!সেই বিভীষিকার দিন আধার হওয়ার পরেই জওয়ানরা কিছু ঠাহর করার আগেই অতর্কিতে জওয়ানদের ক্যাম্পে গুলি চালায় মাওবাদীরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন লাগিয়ে অস্ত্র ভান্ডার লুট হয়ে যায়।নৃশংস ঘটনায় মোট ২৪ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়, আহত হন ২জওয়ান।এই ঘটনার পরেই পুলিশি তদন্ত শুরু হয়।প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। পরর্বতীতে সেই মামলার শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা আদালতে। অবশেষে সেই মামলায় ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হল।

মঙ্গলবার জেলা আদালতে ১৩ জন জেলবন্দী মাওবাদী যথাক্রমে- শুকলাল সরেন,সনাতন সরেন,রাজেশ হাঁসদা,কানাই হাঁসদা,ঠাকুরমনি হেমব্রম,কাজল মাহাতো,মঙ্গল সরেন,রাজেশ মুণ্ডা,শ‌্যামচরন হাঁসদা,মানস মাহাতো,রঞ্জন মুণ্ডা,কল্পনা মাইতি ও মনসারাম হেমরম কে এবং জামিনে মুক্ত থাকা ১০ জন যথাক্রমে- আশিষ মাহাতো,চুনারাম বাস্কে,অর্ণব দাম,প্রশান্ত পাত্র,বিষ্ণু সরেন,লোচন সিং সর্দার,বুদ্ধেশ্বর মাহাতো,রামসাই হাঁসদা ,ধৃতিরঞ্জন মাহাতো সহ অন্য মামলায় জেল হেফাজতে থাকা ইন্দ্রজিৎ কর্মকার সহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়েছিল।তার মধ্যে ১জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন ,এদের সকলকে এদিন ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সেলিম শাহীর এজলাসে কড়া প্রহরায় হাজির করানো হয়।

এ প্রসঙ্গে, সরকারি আইনজীবী দেবাশীষ মাইতি বলেন, ওই ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়েছিল। তারমধ্যে একজন গত হয়েছেন।২৩ জনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন এবং জামিনে থাকা ৯ জনকে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে এদিন মোট ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনকে আদালতে তোলা হয়েছিল,একজন অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সে রাখা হয়েছিল।সূত্রে খবর, বুধবার এই ২৩ জনের কাছ থেকে বক্তব্য শোনার পরেই চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

বুধবার সেই বিভীষিকাময় ঘটনায় রায় দিল আদালত,শিলদার EFR ক্যাম্প হামলায় প্রধান অভিযুক্ত মনসারাম হেমব্রম তার স্ত্রী ঠাকুরমণি হেমব্রম কে সহ মোট ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হল।১৪টি ধারায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাবাস ঘোষণা করেন বিচারক। বাকি অভিযুক্ত এবং হেফাজতে থাকা বাকি ১০ জনের সাজা বুধবার মুজতুবি রাখা হয়েছে, এদের সাজা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে আদালত সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *