পূর্ব মেদিনীপুরব্রেকিং নিউজময়না

ময়না গড়ের ঐতিহ্যবাহী রাসযাত্রা আরম্ভ, মেলা না হওয়ার হতাশ ব্যবসায়ী থেকে রাস প্রেমী মানুষজন।

নিজস্ব। প্রতিনিধি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ও লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ময়নাগড়ের রাসযাত্রা এ বছর ৪৬১ বর্ষে পদার্পণ করলো। এই রাসমেলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাচীনতম ও বৃহত্তম মেলা। এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ কার্তিক পূর্ণিমার মধ্যরাতে রাজপরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ কে নিয়ে নৌকা যাত্রা, যা হাজার হাজার মানুষ ঐদিন রাসযাত্রা দর্শন করে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন। কালিদহ ও মাকড়দহ দিয়ে ঘেরা ময়না গড়ের রাজপরিবারের গোবর্ধন বাহুবলীন্দ্র ১৫৬১ সালে কালীদহের তীরে কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরে প্রথম রাসমেলা শুরু করেন।সেই থেকে বাহুবলীন্দ্র পরিবারের উদ্যোগে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হয়।এর পর ১৯৭০ সাল থেকে স্থানীয় মেলা কমিটির উদ্যোগে মেলা হয়ে আসছে।২০১২ সালে জেলা পরিষদের উদ্যোগে গঠিত হয় ময়না রাস মেলা কমিটি।বর্তমান বছরে ময়না রাস মেলা কমিটির কার্য্য করি সভাপতি অশোকা নন্দ বাহুবলীন্দ্র ও সহ সভাপতি সিদ্ধার্থ বাহুবলীন্দ্র জানালেন করোনা আবহের কারণে প্রশাসন ও ময়না রাস কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সালের ময়নার রাস উৎসবের রাস মেলা স্থগিত রাখা হচ্ছে।তবে পরম্পরা ধর্মীয় আচার অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের উত্থান একাদশীর ২৮ তারিখ ইং ১৫ নভেম্বর ভোর ১৬ নভেম্বর থেকে অর্থাৎ আজ থেকে পরপর আট দিন শ্রী শ্রী শ্যাম সুন্দর জিউ রাজবাড়ীর মূল মন্দির থেকে নৌকা বিহারে কালী দহের ৫০০ মিটার লাবণ্যময় জল পরিক্রমণ করে ময়না রাস মন্দিরে প্রবেশ করবে।কেবল মাত্র পূর্ণিমার দিন সন্ধ্যা ৬টার সময় রাজবাড়ীর কুল দেবতা শ্যাম সুন্দর জিউ ফিরে যাবেন মূল মন্দিরে ।শেষ রাস যাত্রা ২৩ শে নভেম্বর বিকাল তিনটের সময় ঢাক ঢোল কীর্তন,আতশবাজি, বাতাসা লুট সহযোগে রাস মন্দির থেকে নৌকা বিহারে রাজবাড়ী মূল মন্দিরে প্রত্যাবর্তন হবে।

রাসযাত্রা হলেও রাসমেলা না হয় হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রাসপ্রেমী সকল মানুষ জন। রাজপরিবারের কুল পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় পাঠকের গলায় হতাশার ছবিটা স্পষ্ট। তিনি জানালেন রাজপরিবারে কিঞ্চিৎ বেতনে বেতনে কাজ করেন যেটা খুবই নগণ্য তা দিয়ে চা খরচ চলে সারাবছর সংসার খরচ চলে না। রাসমেলা হলে ভক্ত সমাগমে যা অর্থ পাওয়া যায় তা দিয়েই বছরের সংসার খরচ চলে।
রাস মেলার সামনে স্থানীয় এক মিষ্টি ও কদমা দোকানির গলাতেও হতাশার ছবিটা স্পষ্ট। অন্যান্য বছর 200 বস্তা চিনি প্রয়োজন হয়,কিন্তু গত বছর মাত্র 50 বস্তা চিনি লেগেছে। এই রাসে একটি মিষ্টি দোকানে ৫০ কর্মচারী লাগে সেখানে এ বছর মাত্র বারো জন কর্মচারী কাজ করছে। জন সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। এই ভাবেই ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *