নন্দকুমারপূর্ব মেদিনীপুরব্রেকিং নিউজ

বাজারে মাটির প্রদীপের চাহিদা কমছে! জীবিকার টানে পেশাকে আগলে মাটির নানা সামগ্রী তৈরি করে চলেছে মৃৎশিল্পীরা।

নিজস্ব প্রতিনিধি,নন্দকুমার:-‘প্রদীপের নিচে অন্ধকার”।এই বাক্যটির প্রকৃত উদাহরণ হাজারো প্রতিকূলতা সত্বেও কোন রকমে নিজেদের প্রাচীণ ও ঐতিহ্যময় পেশা আগলে বেঁচে রয়েছেন এক শ্রেণীর মৃৎশিল্পীরা।আধুনিকতার যুগে যেখানে ইলেকট্রনিক টুনি ব্লাব মানুষের মন কেড়েছে। সেখানে জীবিকার টানে এখন আগলে রেখেছেন তাদের এই জীবিকাকে। কেমন আছেন মৃৎশিল্পীরা? তা দেখতেই আমরা গিয়েছিলাম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানার ঠেকুয়া বাজার এলাকার মৃৎশিল্পীদের কাছে। এখানকার মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি, কলসী তৈরীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের প্রদীপ, ধূনোচুর, সরা, টব ইত্যাদি তৈরী করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।সারা বছর সেভাবে বিক্রি না হলেও শারদোৎসব সহ দীপাবলীর আগে খুব ভালো বিক্রি হতো তাঁদের। কিন্তু গত দুবছর ‘করোনা’র এবং লাগাতার বৃষ্টির জেরে সেই সাথে আধুনিকতার ইলেকট্রনিক টুনি ব্লাব কারণে চরম দূর্বিষহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে মৃৎশিল্পীরা। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।এখানকার মৃৎশিল্পী স্বপন পাল বলেন, মাটির জিনিসপত্র তৈরি ও তা বিক্রি করে আমাদের সংসার চল। শিল্পী সুদর্শন পাল বলেন, প্রতিবছর পূজোর আগে প্রচুর অর্ডার থাকে, পাশাপাশি এলাকায় যেমন তমলুক, কালিরহাট, নন্দকুমার, শ্রীরামপুর বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ডার আসে। খুব চিন্তায় রয়েছি আমরা। সবমিলিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে জীবনধারণ করছেন তাঁরা। দীপাবলীর আগে খুব ভালো বিক্রি হতো তাঁদের। চরম দূর্বিষহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে মৃৎশিল্পীরা। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।একদিকে মাটি কিনতে হচ্ছে , বালি , জ্বালানি কাঠ, সেই সঙ্গে মজুরি অনেক বেড়েছে । আধুনিকতার যুগে ইলেকট্রনিক অনেক রকমের মোমবাতি, প্রদীপ, এলইডি বেরিয়েছে ফলে মাটির তৈরি প্রদীপ আর মানুষ সেভাবে আগের মত কিনছে না যেখানে ১৫০০-২০০০ প্রদীপ বিক্রি হতো সেখানেই৭০০-৮০০ দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মে আর কেউ এই কাজ করতে চাইছে না বাড়ির ছোট ছোট ছেলেরা তারা এতটাই লাভ কম যে তারা আর এই কাজ করতে চাইছে না।সরকারের পক্ষ থেকে কোনরকম সহযোগিতা মেলেনি তারা কুটির শিল্পে হলেও সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা তারা পায়নি।৭৩ বছরে সুদর্শন পাল দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই মাটির কাজ করছেন। কোমরে বাঁক ধরে গিয়েছে কোনরকম সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে স্বামী-স্ত্রী এই কাজ করেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা চাইতে গেলে মুখ ঝামটা খেতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *