মালদাশীর্ষ খবর

প্রতিবেশীর হাতে খুন গৃহবধূ! নরকীয় হত্যাকান্ডের সাক্ষী থাকলো চাঁচল এলাকা

পার্থ ঝা, মালদা: এক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী থাকলো গোটা এলাকা। প্রতিবেশীর হাতে খুন গৃহবধূ। কুড়ুলের আঘাতের রক্তাক্ত দেহ। খুনের ভয়াবহতায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। সমগ্র ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। তবে খুনের কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, প্রায় দশ বছর হয়েছে স্ত্রী সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া।

তারপরেই গ্রামে দা কোদাল ও কুড়ুল নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন মধ্যবয়সী যুবক।পাশাপাশি বিচ্ছেদের পর গ্রাম বধূদের সাথে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকত তার।যুবক গ্রামের বধূদের একটাই প্রশ্ন করতেন। “আমার জিনিস ফিরিয়ে দাও”।তবে যুবক কি চাইছে,বধূরা জানেননা।গ্রামের বধূদের সাথে এনিয়ে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকত।তবে সেই রেশ শেষ হল বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার রাত্রে প্রতিবেশী বেগুনি দাসের কাছে তার জিনিস ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন শীতল প্রামানিক। সেই সময় তার হাতে ছিল ধারালো কুড়ুল।সেই কুড়ুল নিয়ে বেগুনির তেড়ে আসে যুবক।

যুবকের কুড়লের আঘাতে খুন হতে হলো ৪৮ বছর বয়সী এক মহিলাকে। এমনই নারকীয় হত্যাকান্ডের সাক্ষী থাকলো মালদহের চাঁচল থানার ভগবানপুর গ্রাম।ঘটনার পরেই অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়।গ্রামবাসীরা তাকে ধরে ফেলে।চাঁচল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।ধারালো কুড়ুলটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,শীতলের বাড়ির দরজা খুললেই বেগুনির বাড়ির দরজা দেখতে পাওয়া যায়।বেগুনির দুই ছেলে ও স্বামী রয়েছে।ছেলেরা মুম্বাইয়ে শ্রমিকের কাজে কর্মরত।বাড়িতে স্বামী নিমাই দাসকে নিয়ে থাকে বেগুনি।

স্থানীয় এক বধূ দীপ্তি প্রামাণিক জানান,বেগুনি গোয়ালঘরে গরু ঢুকিয়ে বাড়ির দরজা দাড়িয়েছিল।সেইসময় শীতল কুড়ুল নিয়ে তেড়ে আসে।ভয়ে গ্রামের লোকেদের ডাকতে যায়।কিন্তু এসে দেখি রক্তাক্ত দেহ পরে রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে,অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মৃতা গৃহবধুর ভাস্তি দীপ্তি প্রামাণিক বলেন, কুরুল দিয়ে খুন করেছে আমার কাকিমাকে। কেন মারলো বলতে পারব না। সব সময় বলতো আমার জিনিস দিয়ে দে। কুরুল দিয়ে পেছন থেকে মেরেছে।

প্রতিবেশী নমিতা প্রামাণিক বলেন, গোয়াল ঘরে গরু বাঁধছিল। পেছন থেকে কোপ মেরেছে কুড়ুল দিয়ে। যে খুন করেছে ওর স্ত্রী ১০ বছর আগে ছেড়ে গেছে। তারপর থেকেই প্রত্যেকের সঙ্গে বিবাদ লেগে থাকতো।

মৃতা গৃহবধূর মেয়ে শীতল দাস বলেন, কেন আমার মাকে মারল বুঝতে পারলাম না। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল মা। কোনো ঝামেলা ছিলো না আগে থেকে।

এই খুনের ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। হাড় হিম করা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আতঙ্কিত সকলে। তুই ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে কি মানসিক অবসাদে ভুগছিল অভিযুক্ত? সেখান থেকেই এই ধরনের ঘটনা?নাকি পেছনে অন্য কোন কারণ? তদন্ত শুরু করেছে চাঁচল থানার পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *