নিজস্ব প্রতিনিধি,মালদা:- হাসপাতাল চত্বরে বাটাম দিয়ে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ স্বামীর। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা। স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের। লোনের কিস্তির টাকা দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। সঙ্গে স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুরে। সুনীল মুসহর এবং লালি মুসহর স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই থাকেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের কোয়ার্টারে। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালেই জেনারেটর চালানোর এবং জল সরবরাহের কাজ করেন। অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে সুনীল অত্যাচার চালাত লালির উপর। বেসরকারি ব্যাংক থেকে লোন বাবদ ১ লক্ষ টাকা নেয়। সেই লোনের কিস্তি শোধ করার জন্য সুনীল চাপ দিতে থাকে তার স্ত্রীকে। যেখান থেকে হয় বিবাদের সূত্রপাত। সেই সময় তাকে মারধর করা হতো বলে অভিযোগ। ফলে লালি দুই মাস ধরে বাবার বাড়ি চলে যায়। সুনীলের অভিযোগ সেই সময় সে তার স্ত্রীকে ফোন করলে ফোনে পেতো না। এদিকে টাকার জন্য লালি গয়না বন্ধক দিয়েছিল। সেই বন্ধকের টাকা দেওয়া নিয়েও মহাজনের সঙ্গে লালির ফোনের কথোপকথনের জন্য সুনীল তাকে সন্দেহ করে। এই সব ঝামেলা নিয়ে এর আগেও একবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। যদিও সেই সময় স্ত্রী নিজেই স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন। এদিকে সোমবার বাপের বাড়ি থেকে পুকুরে গেছিলো লালি। সেখানে একা পেয়ে সুনীল তাকে মারধর করে। তারপর হাসপাতাল চত্বরেও বাটাম দিয়ে মারা হয়। ওই অবস্থাতেই লালির বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় যায় অভিযোগ দায়ের করন। জানা যায় এইসব ঘটনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানতো। যদিও এই নিয়ে সেরকম ভাবে কেউ মাথা ঘামায় নি।আক্রান্ত অভিযোগকারী লালি মুশহর বলেন, আমার স্বামী আমাকে বাটাম দিয়ে মারধর করে হাসপাতাল চত্বরে। দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার চালাত আমার উপর। অকারণে সন্দেহ করতো। আমি এর বিচার চাই এবং এই ধরনের অত্যাচার করলে আমি ওর সঙ্গে থাকতে চাই না।আক্রান্ত গৃহবধূ লালির কাকু অসীম দাস বলেন, আমাদের মেয়ের উপর অত্যাচার চলত বলে আমরা বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম ওকে। অকারনে ওর স্বামী ওকে সন্দেহ করতো। লোনের কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিত। ফোন করে উত্ত্যক্ত করতো এবং গালিগালাজ করতো। আমরা এবার এর বিচার চাই।অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মচারী সুনীল মুশহর কার্যত অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। যদিও তাঁর মতে সে তার স্ত্রীকে ফোন করতেই পারে। কিন্তু স্ত্রী মায়ের অজুহাত দিয়ে তার ফোন ধরত না অন্যদিকে ফোনে ব্যস্ত থাকত। তাই সে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি।হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান অভিযোগ জমা পড়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।বধূ নির্যাতন নতুন কোন ঘটনা নয়। আমাদের যুগ উন্নত হলেও আমরা এগিয়ে গেলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা এই ধরনের মধ্যযুগীয় মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনা। তবে যেহেতু সুনীল হাসপাতাল কোয়াটারে থাকতেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল আগেই এই ব্যাপারে প্রতিবাদ করে সঠিক মীমাংসা করা।