জেলানন্দীগ্রামব্রেকিং নিউজ

নন্দীগ্রামে শহীদ বেদীতে ভূমিরক্ষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মরণে মাল্যদান করে সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রাম গণআন্দোলনের জননেতা শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম_দিবসে

নিজস্ব প্রতিনিধি, নন্দীগ্রাম:: নন্দীগ্রাম দিবসে সরগরম নন্দীগ্রাম। একই দিনে একই স্থানে তৃণমূল বিজেপি দুইদল ২০০৭ সালের রক্তাক্ত সূর্যদয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন করল।
একদিকে যেমন কুনাল ঘোষ স্মরণ সভা করলেন, তাঁর পাশাপাশি নন্দীগ্রামের বিধানসভার বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম ভূমি রক্ষা আন্দোলনে স্মরণ সভা করলেন। বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব এদিন উপস্থিত ছিলেন এই নন্দীগ্রাম দিবসের স্মরণ সভায়।
সালটা ২০০৭৷ ১৪ মার্চের ক্ষত তখনও দগদগে৷ নভেম্বরের শুরুতে ফের নন্দীগ্রামের একাংশের দখল নিল সিপিএম৷ ঝরল রক্ত৷ শহিদ হলেন কয়েকজন৷ কলকাতা থেকে আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা ঘোষণা করলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে সূর্যোদয় ঘটেছে!’’ তখনও খেজুরির বটতলায় টিম নিয়ে ঘাঁটি গড়ে রয়েছেন সিআরপিএফের খ্যাতনামা ডিআইজি অলোক রাজ৷ তাঁর দাপটে সিপিএমের সূর্যোদয় ফের সূর্যাস্তে পরিণত হল!

এদিকে অর্ধমৃত দেহ পাচারের পথে এগরায় টিম শুভেন্দুর হাতে পাকড়াও হলেন ছোট আঙারিয়া গণহত্যা কাণ্ডে অভিযুক্ত ‘ফেরার’, গড়বেতার দাপুটে সিপিএম নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলিরা৷ সেই থেকে ফি-বছরই নিয়ম করে ১৪ মার্চের মতো ১০ নভেম্বরও নন্দীগ্রামে পালিত হয়ে আসছে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে শহিদ দিবস৷ ২০২০ থেকে অবশ্য এই শহিদ দিবস পালনে ছন্দপতন ঘটেছে৷

ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরলে দেখা যায়, ২০২০ পুজোর আগে থেকেই সরকার কিংবা দলের কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছিল না শুভেন্দু অধিকারীকে৷ তবে ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের তেখালির বকুলনগর স্কুল মাঠের সভায় এলেন শুভেন্দু৷ ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির পতাকায় ঘেরা সেই মঞ্চে ছিল না তৃণমূলের কোনও পতাকা কিংবা নেত্রীর কোনও ছবি৷ বরং দল বদলের আগে সেই মঞ্চ থেকেই ভারত মাতার জয় স্লোগান দিয়ে শুভেন্দু নাম না করে নেত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে! ১৩ বছর পর আবার নন্দীগ্রামকে মনে পড়েছে!’’ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ভোটের আগে আসছেন, ভোটের পরেও তো আসতে হবে!’’

তখনও বিজেপিতে যোগ দেননি৷ বাতাসে উড়ছে, ভোটের আগে নতুন দল গড়তে পারেন শুভেন্দু৷ জল্পনা উস্কে নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ শুভেন্দুর মুখে শোনা গিয়েছিল ‘‘লড়াইয়ের মাঠে দেখা হবে, রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা হবে। লড়াইতে মানুষ জিতবে, গণতন্ত্র জিতবে। শুভেন্দু অধিকারী কাউকে ভয় পায় না৷’’

তারপর হলদি নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল৷ একুশের ভোট-যুদ্ধ দেখেছে নন্দীগ্রাম৷ সরকারিভাবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক এখন বিজেপির৷ ফের আরও একটা ১০ নভেম্বর৷ দল বদলালেও নন্দীগ্রামের আবেগকে ১৬ আনা ধরে রাখতে মরিয়া শুভেন্দু৷ মরিয়া তৃণমূলও৷ তারই জেরে আগামীকাল বুধবার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোকুলনগর করপল্লীতে শহীদ স্বরণের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে হাজির থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, তাপস রায়, জয়া দত্ত, জেলার দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও অখিল গিরি সহ জেলা একাধিক নেতৃত্বরা।
সূর্যোদয়ের কর্মসূচি সফল করতে মঙ্গলবার বিকেলেও তৃণমূলের তরফে শহীদ স্বরণে নন্দীগ্রামের হাজরাকাটা থেকে একটি মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে৷ নন্দীগ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, “সূর্যোদয় উপলক্ষে বুধবার বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জেলার দুই মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন৷” নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের অপর অন্যতম মুখ আবু তাহের বলেন, “শুধু সকালে নয়, বুধবার বিকেলেও নন্দীগ্রামের হাজরাকাটাতে আমরা বিশেষ কর্মসূচী হয়। শহিদ স্মরণে সেখানে রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *