তমলুকপূর্ব মেদিনীপুর

তাল গাছের অপরিসীম গুণ, বজ্রপাত রুখতে সক্ষম।

পূর্ব মেদিনীপুর: “তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে” ছোটবেলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই তালগাছ কবিতাটি আমরা সবাই পড়েছি। তাল গাছে রয়েছে নানান গুণ। তবে তালগাছের একটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। বজ্রপাত রোধ করতে পারে তালগাছ।

বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মকালের পাশাপাশি বর্ষাকালেও বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির সঙ্গে মুহুর্মুহু বজ্রপাত লক্ষ্য করা যায়। আর বজ্রপাতে মারা যায় মাঠের কৃষক থেকে পথ চলতি সাধারণ মানুষ জন। পরিবেশবিদদেরা মনে করেন বজ্রপাত রুখতে সক্ষম গ্রাম বাংলার এই তালগাছ। বর্তমান সময়ে গ্লোবালআর্মিং এর কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ার ফলে এপ্রিল মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বজ্রপাত হয়। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে তালগাছকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ তালগাছের বাকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। ফলে বজ্রপাতের ইলেকট্রন কনা শোষণ করতে পারে তালগাছ। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক। তালগাছের পাশাপাশি নারকেল গাছ, সুপারি গাছ এর মতো উচ্চতা সম্পন্ন গাছ বজ্রপাত নিরোধে বেশ কার্যকরী।তালগাছের বজ্রপাত নিরোধক গুণের পাশাপাশি জলবায়ুর ওপর তালগাছের প্রভাব নিয়ে পরিবেশবিদ দিলীপ পাত্র জানান, ‘গ্রাম বাংলার তালগাছ বিশেষ উপকারী গাছ।

বর্তমান সময়ে বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করতে এই গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। তালগাছের বাকলে পুরু কার্বন স্তর থাকায় বজ্রপাতের ইলেকট্রন কণা শোষণ করতে পারে তালগাছ। অন্যান্য গাছের থেকে উঁচু ও গঠনগত দিকের পার্থক্য থাকায় এই গাছ বজ্রপাত রোধে কার্যকারী। যেই অঞ্চলে তালগাছের আধিক্য আছে সেই অঞ্চলে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা কম।’ বর্তমান সময়ে প্রায় দিনই বজ্রঘাতে মৃত্যুর খবর উঠে আসে।

তাই বিশেষজ্ঞদের মতামত রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় তালগাছ রোপন করা জরুরী। তালগাছ প্রাকৃতিক উপায়ে বজ্রপাত রোধে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে। এর পাশাপাশি তালগাছ জলবায়ু অর্থাৎ ভূমিক্ষয় বন্যা প্রতিরোধেও সক্ষম। কিন্তু দিনদিন গ্রাম-বাংলায় তালগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই তালগাছ রক্ষা করা দাবি পরিবেশবিদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *