মালদাশীর্ষ খবরহরিশ্চন্দ্রপুর

ছেলে লটারির নেশায় মাতাল! বৃদ্ধা মায়ের ভাতার টাকা কেড়ে নেওয়ায প্রতিবাদ করায় কোপ

পার্থ ঝা, মালদা:প্রতিনিয়ত মার খাচ্ছে ছেলের হাতে তবুও নীরব মা।কারণ নিজের কষ্ট হলেও ছেলের যেন কষ্ট না হয়।তাই পুলিশে অভিযোগও করতে চাইনি সেই অভাগিনী মা।ছেলের মদ খাওয়া ও লটারির টিকিট কাটার টাকা না দিতে পারায় আক্রান্ত হতে হল বৃদ্ধা মাকে।এমনই এক অমানবিক ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বনসরিয়া গ্রামে।পরিবার সূত্রে জানা গেছে,এদিন রাতে বড় ছেলে শঙ্কর দাস(৩০)তার বৃদ্ধা মা নির্মলা দাসকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছিল।দাদার গালিগালাজ শুনে ভাই দীপঙ্কর দাস(২৭)দাদাকে বারণ করতে গেলে সেই যুবক ভাইকেও গালিগালাজ করে ও মারতে যায়।এরপর ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মা বাধা দিতে গেলে মা ও ভাই দুজনকেই মারধর করে বলে অভিযোগ।

এমনকি হাসোয়া দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে দেয় ভাই দীপঙ্কর দাস ও বৃদ্ধ মা নির্মলা দাসকে।সেই যুবকের হাসুয়ার আঘাতে বৃদ্ধার ডান হাত কেটে যায়।চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার করে মা ও ছেলেকে।এবং চিকিৎসার জন্য হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ছোটন দাস নামে বৃদ্ধার ভাইয়ের ছেলে জানায় সঞ্জয় পিসির তিন ছেলে।বড় ছেলে সঞ্জয় দাস কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকে।পিসা রজনী দাস মারা যাওয়ার পর পিসি দুই ছেলে শঙ্কর দাস ও দীপঙ্কর দাস কে নিয়ে থাকে।মেজো ছেলে শঙ্কর দাস বহুদিন থেকে পিসি নির্মলা দাসকে মদ্যপ অবস্থায় গালিগালাজ ও মারধর করে। আমাদের বারণ করেও কোন লাভ হচ্ছে না।গ্রামবাসীরাও অনেকবার তাঁকে বুঝিয়েছে কিন্তু কিছুতেই পিসি সেই ছেলের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

ছোট ছেলে দীপঙ্কর দাস পাঁচ কন্যা নিয়ে নিজের সংসার চালানোর পরেও যতটা সম্ভব পিসিকে দেখে।এবং বড় ছেলে সঞ্জয় দাস মাসে মাসে কিছু টাকা পাঠায়। তা থেকেই বৃদ্ধ পিসির কোনমতে দিন কাটে।কিন্তু শঙ্কর দাস নেশা করার জন্য প্রতিনিয়ত বৃদ্ধ পিসির কাছে টাকা নেয়।এমনকি বৃদ্ধ ভাতার টাকাটাও জোর করে কেড়ে নেয় সেই যুবক।বৃদ্ধার খাওয়ার টাকা কেড়ে নিয়ে তা দিয়ে সেই যুবক প্রতিদিন নেশা করে ও লটারি টিকিট কাটে বলেও জানাই বৃদ্ধার ভাইয়ের ছেলে ছোটন দাস।ছোটন দাস আরও জানায় আমরা পিসির কষ্ট সহ্য করতে না পেরে থানায় অভিযোগ করতে চাইলেও পিসি অভিযোগ করতে নারাজ। কিন্তু এবার আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হতে চাই এবং শঙ্কর দাসের শাস্তি চায়।

বৃদ্ধার ছোট ছেলে দীপঙ্কর দাস জানায় শুক্রবার রাত্রিবেলা মাকে কে প্রচন্ড মারধর করেছে এমনকি বিবস্ত্র অবস্থায় সারা শরীরে আঘাত করেছে। মাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য বার বার মারছে। তাঁর উদ্দেশ্য মা মরে গেলে আমাকে বঞ্চিত করে সম্পত্তির মালিক সে হবে। অন্যায় ভাবে আমাকে ও মাকে মেরেছে। সমস্ত ঘটনা জানিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি দাদার যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।পুলিশ সূত্রে জানা যায় ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *