Christmas time

কোভিড আতঙ্কেও থামেনি সেলিব্রেশন! বড়দিন উদযাপনে ভয় এড়িয়েই উল্লাসে মেতেছে বঙ্গবাসী

নিউজ বাংলা টুডে: বড়দিন মানেই আলোর সাজে সেজে উঠবে চারিদিক, গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা, ক্রিসমাস ক্যারলের শব্দ, চারিদিকে মানুষের ঢল, কেক কাটা আর সন্ধ্যা প্রেরালেই অপেক্ষা সানটা দাদুর আগমনের! এখন সে তো গেল বিদেশী পরিবেশ, বর্তমান যুগে বড়দিনের মরশুম পালনে বাঙালিরাও কিছু কম যায় না। বাংলাতেও বড়দিনের সেলিব্রেশন চলে রমরমিয়ে।

ক্রিসমাস পূর্বেই সেজে ওঠে বাংলার অলিগলি। কলকাতার আবার ব্যাপারটাই আলাদা। বড়দিনে কলকাতায় না যেতে পারা এক প্রকার চরম মিস! পার্ক স্ট্রিট, বউ বাজার, অ্যালেন পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিট, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, নিউ মার্কেট ইত্যাদি জায়গাগুলি বড়দিনে সেজে উঠেছে নবরূপে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সেলিব্রেশানে মাতেন সকলেই। চারিদিকেই চোখ ধাঁধানো লাইটিং সাথে নানা রূপ খাবার-দাবার।

মায়াবী সাজে সেজে ওঠে বাংলার প্রতিটি গির্জা। সন্ধ্যা পেড়ালেই কলকাতার অপরূপ আলোকসজ্জার মুগ্ধতা যেনো টেক্কা দেয় বিদেশি দেশগুলোকেও। যদিও গত দুই বছর কভিড বিধির কারণে থমকে যায় সব কিছুই। বাধ্য হয়েই বন্ধ রাখতে হয় সমস্ত রকমের সেলিব্রেশন। তবে খাদ্য রসিক বাঙালি চিরকালই উৎসবমুখর।

দিনে দিনে বাংলার সেলিব্রেশন লিস্টে যুক্ত হচ্ছে বৈদেশিক নানা উৎসবও। কথায় আছে বাঙ্গালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ! অর্থাৎ প্রায় সারা বছর জুড়েই বাংলায় চলে নানা রূপ সেলিব্রেশন। আর আধুনিক যুগে তা আরও বেড়েই চলেছে ক্রমশ। নিজ সংস্কৃতি বা কালচারের বাইরে সেলিব্রেশানের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন বৈদেশিক ফেস্টিভাল। তাইতো শীতের মরশুম পড়া মাত্রই শুরু হয়েছিল তোরজোর। আগাম প্রস্তুতি চলে কেকের দোকানগুলিতেও।

ক্রিসমাস পূর্বেই জোরকদমে চলে প্রস্তুতি। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই মেতে ওঠেন উৎসবের আমেজে। যদিও সমীক্ষা মতে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা অনুযায়ী খ্রিস্ট ধর্মের মানুষের সংখ্যা মাত্র 0.৬%। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার নিরিখে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা অনেক গুণে কম। বরণ বলা বাহুল্য বড়দিন পূর্বেই রাস্তায় নামা জনস্রোত দেখলে বোঝাই দায়! কোরোনাকে প্রায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে সেলিব্রেশন।এবারের মতন আতঙ্ক এড়িয়ে আনন্দে মেতেছে মানুষ।

হঠাৎ করেই চীনে দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতাল থেকে শ্মশান সর্বত্রই লম্বা লাইন! বেশ কয়েকদিন থেকেই এহেন ভয়ংকর চিত্র উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কোভিডের নতুন ভেরিয়েন্টের খোঁজ পাওয়াতে চিন্তার ছাপ পড়েছে এদেশেও। গবেষকদের আশঙ্কা সচেতনতা না বাড়িয়ে অবহেলা করলেই গোটা বিশ্বে আবারও ভয়ংকরভাবে ছাপিয়ে যেতে পারে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা।আগাম সর্তকতা মানতে এদেশে আবারো হতে পারে লক ডাউন। এখন সকলের মনে একটাই প্রশ্ন তবে কি আবারো কাটাতে হবে সেই দীর্ঘশ্বাসের দিনগুলো?

CMIE-র পরিসংখ্যান বলছে, গত রবিবার শেষের সপ্তাহে (১৮ ডিসেম্বর) দেশের শহরাঞ্চলে কর্মহীন মানুষের হার পৌঁছল ১১ শতাংশের দোরগোড়ায়। আর গোটা দেশের বেকারত্বের হার ৮.৮৫%।এই পরিস্থিতিতে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন কোনওমতেই করোনা মোকাবিলার পথ হতে পারে না। আপাতত হচ্ছে না লকডাউন। আবার অন্যভাবে বলা যায়, এখনই লকডাউন দিতে সরকারও চাইছে না কোনমতেই।

গোটা শীতের মরসুম ধরেই চলে নানা রূপ ফেস্টিভাল, আর তাতে অনেকটাই লাভ হয় রাজ্য সরকারের। বিভিন্ন মেলা ও রকমারি ফেস্টিভেলের উদযাপনের প্রফিটের ভাগ অনেকটাই বাড়ে সরকারের। এ বিষয়ে বলা ভালো, বিশেষত পর্যটন কেন্দ্রগুলি এই আমেজে রাজ্য সরকারের ইনভেস্টেই সেজে ওঠে নতুন ভাবে।অতয়েব মানুষকে আরো বেশি করে আকর্ষণ করতেই তাদের এই উদ্যোগ। ফলে একদিকে যেমন বর্তমানে হঠাৎ করে করোনা বাড়ায় প্রয়োজন সব কিছু বন্ধের, অন্যদিকে ঠিক তেমনি হঠাৎ করে সব কিছু বাতিল হলে এভাবে সমস্যায় পড়তে পারে রাজ্য।

কাজেই পুনরায় কোভিড বাড়লে তার জন্য সাধারণ মানুষ বা সরকার উভয়েই যে ওতপ্রোতভাবে দায়ী তা বলাই বাহুল্য। দুদিন আগে দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগে বৈঠক বসলে অনেকেরই আশংকা ছিল আবারো হয়তো শীঘ্রই আসবে সংকটকালীন পরিস্থিতি।পাওয়া যাচ্ছিল লকডাউনের আভাস। তবে দিন পেড়াতেই জানা গিয়েছে আপাতত রাজ্যে উৎসবের মরসুমে বন্ধ হচ্ছে না কোন কিছুই। মুলত এই খবরের পরেই আরো বেশি সংখ্যক মানুষ ভয়কে উপেক্ষা করে মেতেছেন আনন্দ উৎসবে। কোভিড আতঙ্ককে প্রায় তুড়ি মেরে উড়িয়ে বাংলার সর্বত্রই চলছে জোরদার সেলিব্রেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *