ব্রেকিং নিউজরাজনীতিরাজ্য

এক ডাকেই উপস্থিত শুভেন্দু! মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি আমন্ত্রন সৌজন্যে

নিউজ বাংলা টুডে ডেস্ক: আজ হঠাৎই বিধানসভা অধিবেশনের মাঝে ঘটলো এক উল্টো ঘটনা ! মুখ্যমন্ত্রী আচমকাই নিমন্ত্রণ জানিয়ে বসলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তৃণমূল দলত্যাগী শুভেন্দুকে ডেকে সযত্নে চা প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু বছর পর আবার দেখা গেলো এমন বিরল ঘটনা । তবে এর আড়ালে রয়েছে কোন রহস্য জানেন কি ? এতক্ষনে নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জাগছে এ কি নিহাত ই মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে প্রকাশ!নাকি এর পিছনেও রয়েছে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র! ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক মহল উত্তাল হচ্ছে ক্রমশই। ঘটনাটিকে অনেকেই হালকা ভাবে নিলেও, অনেকেই আবার করছেন তুমুল জল ঘোলা! অনেকেরই দাবি এতদিনের সাপে নেউলের সম্পর্কে হঠাৎ এমন দৃশ্য স্বাভাবিক হতে পারেনা, নিশ্চয়ই এর পেছনে রয়েছে কোনও স্বার্থ।

আসলে বহু বছরের তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্কের প্রাচির ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর এক ডাকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পৌছানো নিয়েই চলছে তুমুল বিতর্ক । একসময় তৃণূলের সঙ্গে তেতুল পাতায় জায়গার মতোন সম্পর্ক ছিল শুভেন্দুর। তখন অবশ্য তৃণমূল পরিবারেরই সদস্য ছিলেন বর্তমানের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। দল থেকে ছিটকে যোগ দেন বিজেপিতে। তারপরেই শুরু হতে থাকে বিরোধী হিসেব কাটা-ছেরা। একের পর এক অভিযোগ আনতে থাকেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মুখোশ খুলে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলতে থাকেন তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেই। যার জেরে ধীরে ধীরে শুভেন্দু হয়ে ওঠেন তৃণমূলের গলার কাঁটা। রাজনিতির বাইরেও নানা কারণে চলতে থাকে একে অপরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও এই কারণেই আরও বেশী চির ধরে সম্পর্কে। তবে বহু বছর পর আবার হাসিমুখে এক টেবিলে দুই বিরোধী দলের স্তম্ভ্য। আজ বিধানসভা অধিবেশনে প্রথম অধ্যায়ের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক দিয়ে বসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কে। মূলত চা পানের আমন্ত্রণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে একই টেবিলে উপস্থিত হন শুভেন্দু নিজেও । এ যেনো এক টানা যুদ্ধের মাঝে ছোট একটা বিরতি। চলতে থাকে কথোপকথন। তবে মিনিটখানেক বাদেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। দ্বিতীয় পর্বের বেল বেজে যাওয়ায় টেবিল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বৈঠক কক্ষে চলে যেতে হয় দুজনকেই। কারণ দ্বিতীয়ার্ধে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দিয়েই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। তবে বাইরের মহলে তর্ক বিতর্ক চললেও ঘটনাটিকে স্বাভাবিক বলেই ব্যাখ্যা দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “শুভেন্দুকে চা খেতে ডেকেছিলাম”। অন্যদিকে বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসার সময় শুভেন্দুর মন্তব্য, “এটা সৌজন্য সাক্ষাৎকার ছিল”।

সূত্র মারফত খবর পাওয়া গিয়েছে, এদিনের সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলনেতা সহ বিধায়কদের কাছে জানতে চান আপনারা কেন সরকারী অনুষ্ঠানে আসেন না। রাজ্যের উন্নয়নে সবার থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। শুভেন্দুকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের বিষয়ে বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য জানান, “রাজ্যে সমস্ত জনপ্রতিনিধির মধ্যে এই সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এটাই তো হওয়া উচিত ছিল।আজ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতাকে পেছনের সারিতে কেন বসার ব্যবস্থা করা হল। মুখ্যমন্ত্রীর পরেই যেখানে বিরোধী দলনেতার স্থান সেখানে তাঁকে কিভাবে অসম্মান করা হল। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বাড়ির সামনে ক্রমাগত অভব্য আচরণ কেন চলবে”।অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবী, “রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সামান্য বিষয়কে বড় করে দেখা হল। এখানে শুভেন্দু তথা বিজেপির নেতৃবৃন্দ যদি এই সৌহার্দ্যবোধ বিষয়টি বুঝতে পারেন তা হলে তা রাজ্যবাসীর জন্য যথেষ্ট ভালো হবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *