বিনোদনব্রেকিং নিউজ

অকালপ্রয়ানে অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা ! সমাপ্তি হলো জীবনযুদ্ধের

নিউজ বাংলা টুডে ডেস্ক: অবশেষে সমাপ্তি দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের। মিরাকেলে ফিনিক্স হয়ে ফেরাটা আর হলো না ! হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই নিভল জীবন বাতি। গত পয়লা নভেম্বর হঠাৎ ব্রেন স্টোকে আক্রান্ত ঐন্দ্রিলাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ১৯দিনের লড়াইয়ে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থা আরও সংকট জনক হয়। চলে যান কোমায়। অসার হতে থাকে শরীরের এক একটি অঙ্গ, নড়েনা চোখের পাতা। কয়েকদিন যাবৎ গুরুতর অসুস্থ ছিলেন ঐন্দ্রিলা। কয়েক দিন ধরেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাইভ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করেন চিকিৎসকও। এ সময় ভেন্টিলেশনে থাকাকালীন রুমে বাজত তাঁর প্রিয় গান, পাশে থাকত প্রিয় মানুষ সভ্যসাচী। কখনো অবস্থার একটু উন্নতি হলেও মুহুর্তেই আবার হয়ে উঠতো সংকটজনক। তবে জানা যায় একটানা বহুদিন কোমায় থাকার থাকার পর নড়ে চোখের পাতা, শোনা যায় তিনি প্রিয় মানুষের গলা চিনতে পারছেন। তাই আশঙ্কাজনক অবস্থা কাটিয়ে ক্রমশই সুস্থতার আশা দেখেছিলেন সকলেই। কিন্তু গতকাল রাতে হঠাৎই তার শারীরিক অবস্থা সংকট থেকে অতি সংকটের দিকে এগোতে থাকে। তারপর চিকিৎসকের হাজার চেষ্টাকে পিছনে ফেলে মৃত্যুর মুখে এগোতে থাকেন তিনি। এক রাতেই এক-দুবার নয় ! বরং প্রায় দশ বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তাঁর। আর এর পরেই কমতে থাকে আশার আলো। অবশেষে রবিবার দুপুরে নিভে যায় জীবনবাতি।

এ সময় পাশে ছিলেন অনেকেই । জীবনপন লড়াই করে তাকে বাঁচিয়ে আনার জন্য চিকিৎসায় আর্থিকভাবে সাহায্য করেন টলি পাড়ার বড়ো তারকাদের অনেকেই । পূর্বেও দু-দুবার ক্যান্সার আক্রান্ত ঐন্দ্রিলার লড়াকু মানসিকতাই তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল নতুন জীবন। প্রথম যখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তিনি তখন সবেমাত্র একাদশ শ্রেণীর। এরপর চলে কঠিন লড়াই। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পথে হাঁটতে শুরু করলে আবারও আক্রান্ত হন মরণব্যাধি কান্সারে। চলতে থাকে একের পর এক কেমো। মানসিক ও শারীরিক কষ্ট উপেক্ষা করে তিনি জয়ী হয়ে ফিরে আসেন দুবারই। পরে অবশ্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এ সময় শারীরিকভাবে কষ্ট পেলেও মানসিক কষ্টে একেবারেই ভগেননি তিনি। আর তা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রিয় মানুষের পাশে থাকার কারণেই। পরিবারের ভালোবাসা এবং প্রিয় মানুষ সভ্যসাচির লড়াই দেখে পান বাঁচার জোর। এত মানুষের ভালোবাসায় নাকি ছিল তার লড়াইয়ের শক্তি। তাই পয়লা নভেম্বর হঠাৎ ব্রেনস্টকে আক্রান্ত হয়ে হসপিটালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হলেও, আশা থামেনি তখনও। এ যেন আবারও এক বাঁচতে চাওয়ার কঠিন যুদ্ধ ! পরিবারের মানুষ, বন্ধু ও প্রেমিক সভ্যসাচী ছাড়াও এবারের লড়াইয়ে তার সাথে ছিল হাজার হাজার মানুষ। হাজার হাজার মানুষের চাওয়া ছিল শুধু একটাই – ‘ঘটুক মিরাকেল, ফিনিক্স হয়ে ফিরে আসুক ঐন্দ্রিলা’ । কিন্তু কথায় আছে যা ঘটার তা ঘটবেই ! এই কথাটিই যেনো মিলে গেল আবার । হাজার হাজার মানুষের প্রার্থনার জোরেও হলো না চমৎকার! এবার আর ফিরে আসা হলো না। এত মানুষের পাশে থাকার পরেও জিতে ফিরে এলেন না জীবন যুদ্ধে। রবিবার দুপুরে সকল প্রার্থনার বাঁধন ছিঁড়ে চিরতরে হারিয়ে গেলেন না ফেরার দেশে। তবে জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেও তিনি লরেছেন , একজন সফল অভিনেত্রীর পাশাপাশি তিনি সকলের মনে থেকে যাবেন তার লড়াইয়ের গল্পের যোদ্ধা রূপে। তাই এভাবেই সকলের মনে গেঁথে থাকবে অভিনেত্রীর সাহসিকতার গল্প, গেঁথে থাকবে তার ও সভ্যসাচীর এক অমর ভালোবাসার কাহিনী। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক ঐন্দ্রিলা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *